মিউজিক থেরাপি: মানসিক চাপ কমাতে এবং মুড ঠিক রাখতে গানের জাদুকরী ভূমিকা
সারাদিনের অফিসের কাজের চাপ, ট্রাফিক জ্যামের ক্লান্তি, কিংবা ব্যক্তিগত জীবনের নানা দুশ্চিন্তা—দিন শেষে আমরা সবাই একটু মানসিক প্রশান্তি খুঁজি। কেউ বই পড়েন, কেউ ঘুমান। কিন্তু বিজ্ঞানের মতে, মানুষের ইমোশন বা আবেগের ওপর সবচেয়ে দ্রুত প্রভাব ফেলতে পারে যা, তা হলো ‘মিউজিক’ বা গান।
গান শোনা এখন আর শুধু সময় কাটানোর মাধ্যম নয়, এটি এখন একটি থেরাপি। বিশ্বজুড়ে মনোবিজ্ঞানীরা একে বলছেন ‘মিউজিক থেরাপি’। কিন্তু কীভাবে গান আপনার মস্তিষ্ক এবং মনের ওপর কাজ করে? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
১. হরমোনের খেলা: ডোপামিন বনাম কর্টিসল
আপনি যখন আপনার পছন্দের কোনো গান শোনেন, তখন আপনার মস্তিষ্ক থেকে ‘ডোপামিন’ (Dopamine) নামের একটি নিউরোট্রান্সমিটার নিঃসৃত হয়। একে বলা হয় ‘ফিল গুড’ হরমোন। এটি আপনাকে আনন্দ এবং সুখের অনুভূতি দেয়।
অন্যদিকে, দুশ্চিন্তার সময় আমাদের শরীরে ‘কর্টিসল’ (Cortisol) বা স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ধীর লয়ের বা ইন্সট্রুমেন্টাল মিউজিক শুনলে শরীরে কর্টিসলের মাত্রা দ্রুত কমে আসে এবং পেশীগুলো শিথিল হতে শুরু করে।
২. মুড অনুযায়ী গানের নির্বাচন
সব গান সব সময়ের জন্য নয়। আপনার মানসিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে গান নির্বাচন করাটা খুব জরুরি:
- দুশ্চিন্তা বা অ্যাংজাইটি কমাতে: ধীর গতির ক্লাসিক্যাল মিউজিক বা প্রকৃতির শব্দ (বৃষ্টি, সমুদ্রের ঢেউ) খুব ভালো কাজ করে।
- এনার্জি বা মোটিভেশন পেতে: আপনি যখন খুব অলস অনুভব করছেন বা জিমে ওয়ার্কআউট করছেন, তখন হাই-বিটস বা ‘Upbeat’ মিউজিক আপনার হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেয় এবং আপনাকে চনমনে করে তোলে।
- মন খারাপের সঙ্গী: অবাক করা বিষয় হলো, মন খারাপ থাকলে অনেক সময় স্যাড সং বা বিরহের গান আমাদের হালকা অনুভব করতে সাহায্য করে। একে বলা হয় ‘ক্যাথারসিস’—গানের কথার সাথে নিজের কষ্ট মিলিয়ে মন হালকা করার প্রক্রিয়া।
৩. কাজের ফোকাস বাড়াতে ‘Lo-Fi’ বিটস
অনেকেই কাজের সময় বা পড়ার সময় গান শুনতে পছন্দ করেন। কিন্তু লিরিক্স বা কথা আছে এমন গান অনেক সময় মনোযোগ নষ্ট করতে পারে। এক্ষেত্রে ‘Lo-Fi’ (Low Fidelity) বিটস বা এমবিয়েন্ট মিউজিক জাদুর মতো কাজ করে। এটি মস্তিষ্কের আলফা ওয়েভকে সক্রিয় করে, যা মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে।
৪. সঠিক গান খোঁজার স্মার্ট সমাধান
মিউজিক থেরাপির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সঠিক সময়ে সঠিক গানটি খুঁজে পাওয়া। আপনি যখন খুব ক্লান্ত, তখন প্লেলিস্ট সাজানো বা গান সার্চ করাটাও একটা বাড়তি চাপের মতো মনে হতে পারে।
এখানেই আধুনিক স্ট্রিমিং অ্যাপগুলো আপনার জীবন সহজ করে দিতে পারে। যেমন, দেশীয় অ্যাপ DigiMi-র কথাই ধরা যাক। এর স্মার্ট অ্যালগরিদম আপনার শোনার প্যাটার্ন এবং বর্তমান মুড বুঝে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার জন্য গান সাজিয়ে দেয়।
ধরুন, আপনি রিলাক্স করতে চাইছেন, DigiMi-তে কেবল ‘Relax’ বা ‘Sleep’ মোড সিলেক্ট করলেই অ্যাপটি আপনাকে শুনিয়ে যাবে একের পর এক প্রশান্তিদায়ক সুর। গান খোঁজার ঝামেলা বাদ দিয়ে আপনি শুধু মুহূর্তটা উপভোগ করবেন।
শেষ কথা
মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং প্রয়োজনীয়তা। তাই পরেরবার যখনই খুব চাপ অনুভব করবেন, অহেতুক দুশ্চিন্তা না করে কানে হেডফোন লাগান এবং হারিয়ে যান সুরের ভুবনে। মনে রাখবেন, সঠিক গান মুহূর্তেই আপনার খারাপ দিনটিকে ভালো করে দিতে পারে।
আপনার মুড অনুযায়ী সেরা গানের কালেকশন পেতে এবং হাই-কোয়ালিটি অডিওর অভিজ্ঞতা নিতে আজই এক্সপ্লোর করতে পারেন DigiMi অ্যাপ।
Digital Bay-এর পক্ষ থেকে শুভকামনা। গান শুনুন, ভালো থাকুন।